এর আগেও ঝুকিপূর্ণ টিনশেড ঘরে শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা করে আসত। এ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদপত্রে সংবাদ ছাপা হলেও কার্যকরি কোন ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। দ্রুত মাদ্রাসাটি মেরামত করা না হলে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা করানো সম্ভব হবে না।
প্রসঙ্গত,কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ফলুয়ারচর ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ ৪৩বছর শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলো ছড়ালেও এখনও মাদ্রাসাটি এমপিও হয়নি। শিক্ষার বিনিময়ে শিক্ষক-কর্মচারী পাননি কোন পারিশ্রমিক। অন্যদিকে কোন ভবন না থাকায় অসমাপ্ত একটি ঝুঁকিপূর্ণ টিনের ঘরে চলছিল নিয়মিত পাঠদান। ফলে একদিকে শিক্ষকরা যেমন মানবেতর জীবন-যাপন করছেন অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাঠ গ্রহণ করে আসত।
প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৭ সালে উপজেলার ফুলয়ারচর এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়াতে প্রতিষ্ঠিত হয় ফলুয়ারচর স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসাটি। শিক্ষকদের সহায়তায় মাদ্রাসায় একটি টিনের ঘর তৈরি করা হয়। বর্তমানের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী রয়েছে ১শ ৬৭জন। শিক্ষক ৫ জন ও ১জন কর্মচারী রয়েছে। প্রতিষ্ঠানে ছিল দিগন্ত জোড়া মাঠ ও খোলামেলা পরিবেশ।
প্রধান শিক্ষকের দক্ষতা ও নিষ্ঠাবান শিক্ষকের কারণে ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষায় কয়েক বার ভালো ফলাফল করেছে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এরকম সব ধরনের শর্ত পূরণ করা স্বত্বেও প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ৪৩ বছর পরও মাদ্রাসাটি এমপিওভূক্ত হয়নি। ওই মাদ্রাসারটির প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বীর মুক্তিযোদ্ধা ২০১৮ সালে বিনাবেতনে ও পেনশনবিহীন বয়সের ভারে অবসরে যান। এছাড়াও আরেক সহকারি শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন বয়সের ভারে তিনি মারা গেছেন।
শিক্ষক ও কর্মচারীরা জানান, সংসারের হাল ধরতে এই প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেন শিক্ষক-কর্মচারী। ভেবেছিলেন একদিন সুখের মুখ দেখবেন। কিন্তু চাকরি জীবনের বেশির ভাগ সময় অতিবাহিত হলেও সেই সুখের দেখা মেলেনি। একদিকে শিক্ষার্থীদের বেতন নেই অন্যদিকে এমপিওভূক্ত না হওয়ায় সরকারি কোষাগার থেকে বেতন-ভাতা না পেয়ে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাছাড়া আগেও মাদ্রাসায় বর্ষার সময় একটু বৃষ্টি হলেই ঘরের ভেতরে পানি যেতো। বেশি বৃষ্টি হলে পাঠদান চালু রাখা খুবই কঠিন হয়ে পড়ত। এছাড়া ঘরগুলো মজবুত না হওয়ায় ঝড়ে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আগেও ছিল।
[[মাদ্রাসাটির প ম শ্রেনীর সোমাইয়া, শান্তি খাতুন, সুজন মিয়া, আশরাফুলসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী বলে, এর আগেও বৃষ্টির সময় বেশি সমস্যা হতো। সামান্য বৃষ্টি হলেই ঘরের ভিতরে পানি পড়ে বই-খাতা ভিজে যেতো। তারপরেও এবারের বন্যায় আমাদের মাদ্রাসার ঘরটি ভেঙ্গে গেল। তারাতারি মেরামত না করলে আমাদের লেখাপাড় করা খুবই কষ্ট হবে।
মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম জানান, অসমাপ্ত টিনের ঘরে ঝুঁকি নিয়ে মাদরাসার পাঠদান চালু রেখে ছিলাম।মাঝে মাঝে শিক্ষকদের কিছু সহায়তায় পাঠদানের জন্য ঘর নির্মান করা হলেও দীর্ঘ দিন ধরে টিনের চালা, বেড়া, জানালা অকেজো হয়েছিল। টাকার অভাবে ঘরটি মেরামত করতে পারেনি। চালার টিনগুলো ফুটো হয়েছিল। সর্বশেষ এবারের কয়েক দফা বন্যার পানিতে মাদ্রাসার ঘরটি ভেঙ্গে গেল। আমরা মাদ্রাসার ঘরটি মেরামতের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন দিয়েছিল। আশাকরি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ মাদ্রাসাটির দিকে সুনজর দিবেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ বি এম নকিবুল হাসান বলেন, এবিষয়ে সমন্বয় সভায় আলোচনা করা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল ইমরান জানান, মাদ্রাসা মেরামতে ব্যাপারে আবেদন পেয়েছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছি।
নতুন প্রত্যাশায় ।। আকাশ বার্তা
0 মন্তব্যসমূহ
আপনার মূল্যবান মন্তব্যটি করার জন্য...ধন্যবাদ