কাঁচা ছোলার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। এ ছোলা কাঁচা ও সেদ্ধ করে খাওয়া যায়। এ ছোলায় বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন, খনিজ লবন, ম্যাগনেশিয়াম ও ফসফরাস রয়েছে। এছাড়া প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যপোযোগী ছোলায় আমিষ প্রায় ১৮ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট প্রায় ৬৫ গ্রাম, ফ্যাট মাত্র ৫ গ্রাম, ২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ‘এ’ প্রায় ১৯২ মাইক্রোগ্রাম এবং প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি-১ ও বি-২ আছে। যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকার।
আসুন জেনেই কাঁচা ছোলার উপকারিতা সম্পর্কে
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে
ছোলা বয়সসন্ধি পরবর্তীকালে মেয়েদের হার্ট ভাল রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া যে
সকল অল্প বয়সী নারীরা বেশি পরিমাণে ফলিক এসিডযুক্ত খাবার খান তাদের
হাইপারটেনশন এর প্রবণতা কমে যায়। ছোলায় রয়েছে প্রচুর পরিমান ফলিক এসিড। তাই
ছোলা খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রেণে রাখা যায়। আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন
জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় এমনটিই বলা হয়েছে।
ক্যান্সার রোধে
বেশি পরিমাণ ফলিক এসিড খাবারের সাথে গ্রহণের মাধ্যমে নারীরা কোলন ক্যান্সার
এবং রেক্টাল ক্যান্সার এর ঝুঁকি থেকে নিজিদেরকে মুক্ত রাখতে পারেন। এছাড়া
ফলিক এসিড রক্তের অ্যালার্জির পরিমাণ কমিয়ে এ্যজমার প্রকোপও কমিয়ে দেয়
বলে কোরিয়ান গবেষকরা তাদের একটি গবেষণায় তা প্রমাণ করেছেন।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে
ছোলাতে দ্রবণীয় এবং অদ্রবণীয় উভয় ধরনের খাদ্য আঁশ আছে, যা হৃদরোগে
আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। আঁশ, পটাসিয়াম, ভিটামিন ‘সি’ এবং
ভিটামিন বি-৬ হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। ফলে হৃদরোগের
ঝুঁকি কমে যায়। এর ডাল আঁশসমৃদ্ধ যা রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতে
সাহায্য করে।
রক্ত চলাচল
ছোলায় অবস্থিত আইসোফ্লাভন ইস্কেমিক স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিদের আর্টারির
কার্যক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়। এছাড়া প্রতিদিন ১/২ কাপ ছোলা, শিম এবং মটর
খেলে পায়ের আর্টারিতে রক্ত চলাচল বেড়ে যায়।
কোলেস্টেরল
শরীরের অপ্রয়োজনীয় কোলেস্টেরল কমাতে ছোলা কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। ছোলায়
প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট ছাড়া আরও বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ লবণ
রয়েছে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ছোলা ভূমিকা রাখে। ছোলায় খাদ্য-আঁশও আছে প্রচুর। আর এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
রক্তের চর্বি কমায়
ছোলার ফ্যাটের বেশিরভাগই পলি আনস্যাচুয়েটেড। এই ফ্যাট শরীরের জন্য মোটেই ক্ষতিকর নয়, বরং রক্তের চর্বি কমায়।
অস্থির ভাব দূর করে
ছোলায় শর্করার গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের পরিমাণ কম থাকায় শরীরে প্রবেশ করার পর অস্থির ভাব দূর হয়।
রোগ প্রতিরোধ করে
কাঁচা ছোলা ভিজিয়ে কাঁচা আদার সঙ্গে খেলে শরীরে আমিষ ও অ্যান্টিবায়োটিকের
চাহিদা পূরণ হয়। আমিষ মানুষকে শক্তিশালী ও স্বাস্থ্যবান বানায় এবং
অ্যান্টিবায়োটিক যে কোনো অসুখের জন্য প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
জ্বালাপোড়া দূর করে
সালফার নামক খাদ্য উপাদান থাকে এই ছোলাতে। সালফার মাথা গরম হয়ে যাওয়া, হাত-পায়ের তলায় জ্বালাপোড়া কমায়।
মেরুদণ্ডের ব্যথা দূর করে
ছোলাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘বি’ আছে। ভিটামিন ‘বি’ মেরুদণ্ডের ব্যথা,
স্নায়ুর দুর্বলতা কমায়। ছোলা আমিষের একটি উল্লেখযোগ্য উৎস। এতে আমিষ মাংস
বা মাছের পরিমাণের প্রায় সমান। তাই খাদ্যতালিকায় ছোলা থাকলে মাছ মাংসের
প্রয়োজন পরে না। এছাড়া ত্বকে আনে মসৃণতা।
ডায়াবেটিসে উপকারী
১০০ গ্রাম ছোলায় আছে প্রায় ১৭ গ্রাম আমিষ বা প্রোটিন, ৬৪ গ্রাম শর্করা বা
কার্বোহাইড্রেট এবং ৫ গ্রাম ফ্যাট বা তেল। ছোলার শর্করা বা কার্বোহাইডেটের
গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম। তাই ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য ছোলার শর্করা ভাল।
প্রতি ১০০ গ্রাম ছোলায় ক্যালসিয়াম আছে প্রায় ২০০ মিলিগ্রাম, লৌহ ১০
মিলিগ্রাম, ও ভিটামিন এ ১৯০ মাইক্রোগ্রাম। এছাড়া আছে ভিটামিন বি-১, বি-২,
ফসফরাস ও ম্যাগনেসিয়াম। এর সবই শরীরের উপকারে আসে।
যৌনশক্তি বৃদ্ধিতে
যৌনশক্তি বৃদ্ধিতে এর ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। শ্বাসনালীতে জমে থাকা
পুরনো কাশি বা কফ ভালো হওয়ার জন্য কাজ করে শুকনা ছোলা ভাজা। ছোলা বা বুটের
শাকও শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী। প্রচুর পরিমাণে ডায়াটারি ফাইবার বা আঁশ
রয়েছে এই ছোলায় ও ছোলার শাকে। ডায়াটারি ফাইবার খাবারে অবস্থিত পাতলা আঁশ,
যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
নতুন প্রত্যাশায় ।। আকাশ বার্তা
0 মন্তব্যসমূহ
আপনার মূল্যবান মন্তব্যটি করার জন্য...ধন্যবাদ